ফরিদাবাদে জঙ্গি মডিউল ভেঙে বড় চক্র🔍 উন্মোচন: অস্ত্র, বিস্ফোরক ও অর্থযোগে মিলল নতুন তথ্য
ফরিদাবাদে গ্রেফতার হওয়া জঙ্গি মডিউলকে কেন্দ্র করে তদন্তে উঠে এসেছে অত্যন্ত সংগঠিত অস্ত্র সরবরাহ ও বিস্ফোরক প্রস্তুতকারক নেটওয়ার্কের চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্তকারী সংস্থাগুলোর দাবি, জঙ্গি সংগঠন জইশ-এ-মোহাম্মদের (JeM) সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আটক কয়েকজনের কাছ থেকে রাশিয়ান উৎসের অস্ত্র, পিস্তল এবং বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক তৈরির কেমিক্যাল উদ্ধার করা হয়েছে।
শুরুতেই ফরিদাবাদে তল্লাশিতে উদ্ধার হয় একটি রাশিয়ান AK ক্রিংকভ রাইফেল, একটি চায়নিজ স্টার পিস্তল, একটি বেরেটা পিস্তল এবং প্রায় ২,৯০০ কেজি বিস্ফোরক তৈরির উপাদান। কর্মকর্তাদের দাবি, এটি কোনো সাধারণ মজুত নয়—বরং সুপরিকল্পিত সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অংশ হতে পারে।
তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, লক্ষ্ণৌ–ভিত্তিক ড. শাহীন গোপনে রাশিয়ান অ্যাসল্ট রাইফেল সংগ্রহের ব্যবস্থা করেন এবং বিশেষ আলোচনা করে সরবরাহকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলেন। তাঁর অনুরোধেই ড. মুজাম্মিল অস্ত্র কেনার দায়িত্ব নেন। মোট প্রায় ২৬ লাখ টাকা সংগ্রহ করা হয়, যার বড় অংশই ড. শাহীন জোগাড় করেছেন বলে জানা যাচ্ছে।
অফিসিয়াল সূত্রের দাবি, একটি ডিপ ফ্রিজারও কেনা হয়েছিল—যার ভেতরে তাপমাত্রা–সংবেদনশীল কেমিক্যাল রাখা হত। এগুলো শক্তিশালী আইইডি (IED) তৈরির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ফরেনসিক দল উদ্ধারকৃত কেমিক্যাল পরীক্ষা করে এর প্রকৃতি শনাক্তের চেষ্টা করছে।
আরও জানা গেছে, ড. আদিলের লকার থেকে উদ্ধার হওয়া একটি AK-56 রাইফেল তদন্তে বড় অগ্রগতি এনে দিয়েছে। কর্মকর্তাদের ভাষ্য—এত অস্ত্র, অর্থ, রাসায়নিক এবং সরঞ্জাম দেখেই বোঝা যায় মডিউলটি পরিকল্পনা, তহবিল এবং প্রস্তুতির দিক থেকে অনেক দূর এগিয়ে ছিল।
গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, জইশ কমান্ডার ও পুলওয়ামা হামলার মূল হোতা উমর ফারুকের স্ত্রীর মাধ্যমে সম্ভাব্য যোগাযোগের সূত্রও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উল্লেখ্য, উমর ফারুক জইশ প্রধান মসুদ আজহারের ভাতিজা এবং ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর সংঘর্ষে নিহত হন।
তদন্তে আরও উঠে এসেছে, অভিযুক্ত উমর অনলাইনে বিভিন্ন ম্যানুয়াল, টিউটোরিয়াল ও ওপেন সোর্স তথ্য থেকে বিস্ফোরক তৈরির কৌশল শিখেছিলেন। তিনি নুহ অঞ্চল থেকে রাসায়নিক, দিল্লির ভগীরথ প্যালেস থেকে ইলেকট্রনিক উপাদান এবং ফারিদাবাদের বাজার থেকে অন্যান্য সামগ্রী সংগ্রহ করেন। পরে সেগুলো ডিপ ফ্রিজারে সংরক্ষণ করা হতো বলে অভিযোগ।
সূত্রের দাবি, আল-ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অর্থসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে অভিযুক্তদের মধ্যে বিরোধও দেখা দেয়। ঘটনার পর উমর তার লাল ইকোস্পোর্ট গাড়িটি—যার ভেতরে বিস্ফোরক উপাদান লোড করা ছিল—মুজাম্মিলের হাতে তুলে দেয়।
বর্তমানে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অস্ত্র সরবরাহকারী নেটওয়ার্ক, অর্থের উৎস এবং সম্ভাব্য আন্তর্জাতিক যোগাযোগ নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে
0 মন্তব্যসমূহ